মো: আমিনুল ইসলাম: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষক মো. শাহ্ আলমের গ্রন্থ “হৃদয়ে জুলাই ৩৬” ইতিহাসের জন্য মাইল ফলক হিসাবে কাজ করবে। এছাড়া নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ২০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বইটির মোড়ক উম্মেচন করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, দৈনিক গণজাগরণের সম্পাদক মুহাম্মদ আলমগীর হোসাইনসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা।
অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরো বলেন, বাংলাদেশে গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘ যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যে ঘটনাগুলো সত্য, এগুলো প্রকাশ পেয়েছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, গণহত্যা হয়েছে, এটা আজকে প্রমাণিত হয়ে গেছে। এ দেশের মানুষকে তিনি অত্যাচার নির্যাতন করেছেন। যত মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতন্ত্র হত্যা সবকিছু তারই নির্দেশেই হয়েছে। সুতরাং এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে হাসিনা ফ্যাসিস্ট। এই ফ্যাসিস্ট যেন দেশের মাটিতে ফিরে আসতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাক থাকতে হবে।
বইটির ফ্ল্যাপে উল্লেখ করা হয়েছে, গত প্রায় ১৬ বছর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী সরকার রাজত্ব করেছিল। বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছিল প্রতিটি ক্ষেত্রে। এমনকি মত প্রকাশের ভাষা ও লেখনীর শক্তিও হারিয়ে ফেলেছিল এ দেশের মানুষ। ‘গুম, খুন, হত্যা, বলপূর্বক ধরে নিয়ে আয়নাঘরে আটক রাখা ইত্যাদি নির্মম নির্যাতনের মধ্য দিয়ে আমরা পার করছিলাম এক নিষ্ঠুর কালো অধ্যায়। এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে।’
‘একগুঁয়ে ও চরম হঠকারী হাসিনার সরকার ছাত্রদের বিরুদ্ধে নির্যাতন শুরু করে। ছাত্ররাও দমে যাওয়ার পাত্র ছিল না। অকাতরে জীবন দিয়েছে তবুও ফ্যাসিবাদের কাছে মাথা নত করেনি। হৃদয়ে জুলাই ’৩৬ হলো ছাত্রদের জীবন দেওয়ার সংক্ষিপ্ত ইতিহাসের আলোকে লেখা যা ইতিহাসের আকরগ্রন্থ হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আন্দোলন চলাকালীন এবং গত ১৬ বছর চরম নির্যাতনের শিকার আমি নিজেও হয়েছিলাম।’
ফ্ল্যাপে আরও উল্লেখ করা হয়, সেই যুগান্তকারী ও আশা জাগানিয়া ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলনের তীব্রতা এতই কঠিন ও গগণবিদারী ছিল যে, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি এমনকি বায়তুল মোকাররম মসজিদের ইমামও পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। তাই ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের বিজয়কে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে অমর করে রাখতেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।
শাহ্ আলম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে বিএ অনার্স এবং এম এ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম (গোল্ড মেডেল) স্থান অর্জন করেন তিনি। শাহ্ আলম বাংলাদেশ টেলিভিশনের রিপোর্টার ও উপস্থাপক ছিলেন। বিটিভিতে চাকরিকালীন তার মেধা ও সাহসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। এতে ‘শাহ্ আলম বাংলাদেশ টেলিভিশন’নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন।