Thursday, February 6, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeদেশঢাকা রেশনিংয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

ঢাকা রেশনিংয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: খাদ্যশস্যের বাজার মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রবণতা রোধ করে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীকে মূল্য সহায়তা দেওয়া এবং বাজার দর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পাবলিক ফুড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের আওতায় খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রির নীতিমালা জারি করেছে সরকার।

নীতিমালা বলা হয়েছে, ওএমএস কার্যক্রম ট্রাকসেল/দোকান সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলমান থাকবে। ডিলার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান/ট্রাকসেল খোলা রাখবেন। তবে নির্ধারিত সময়ে আটা ও চাল বিক্রি শেষে অবশিষ্ট যে পরিমাণ আটা ও চাল থাকবে তা ট্যাগ অফিসার যাচাই করবেন। যাচাইয়ের পর রেজিস্টারে ডিলার স্বাক্ষর করবেন এবং ট্যাগ অফিসারকে মালামালের হিসাব বুঝিয়ে দেবেন।
কোনো ডিলার একনাগাড়ে ১৫ দিন খাদ্যশস্য উত্তোলনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ডিলারের ডিলারশিপ বাতিল হবে এবং ওই ডিলারের বিপরীতে নতুন ডিলার নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে।

তবে, কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা ও ডিলারের কারণে সরকারের সব উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও ডিলারদের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত চাল ও আটা নিতে পারেন না দরিদ্র জনগোষ্ঠীর এই মানুষেরা।

জানা গেছে, এ ধরনের অভিযোগ ঢাকা রেশনিংয়ের ডি -১ থেকে ডি -৯ পর্যন্ত সকল এলাকায় বিদ্যমান। ও এম এস নীতিমালা২0২২ অনুযায়ী প্রতিটি দোকান সেল/ ট্রাক সেল এ তদারককারী কর্মকর্তা বিক্রয় স্থলে বিক্রয় যোগ্য মালামাল অর্থাৎ মালের বস্তার পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে বিক্রয় আদেশ দিবেন। প্রায় ক্ষেত্রেই তদারককারী কর্মকর্তাগণ অনুপস্থিত থাকেন | এই সুযোগে ডিলারগণ বিশেষ করে দোকান সেলের ক্ষেত্রে চাল ও আটা গোপনে নিজেদের পছন্দমতো দোকানে বেশি দামে বিক্রি করে দেন |

ট্রাকগুলো নির্দিষ্ট স্থানে সকাল ৯ ঘটিকার মধ্যে থাকার কথা থাকলেও সকাল ১১ টার পর এবং ডিলারগণ খুব ধীরগতিতে ট্রাকের মালামাল বিক্রি করেন। ধীর গতিতে মালামাল পরিমাপের প্রধান কারণ হলো বিকেল পাঁচটা বাজার সাথে সাথেই অবশিষ্ট মালামাল নিয়ে ট্রাকগুলো সেখান থেকে চলে যান। গাড়িতে থাকা অবশিষ্ট মালগুলো বেশি দামে ডিলারগণ বাহিরে দোকানে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তারা।

ঢাকার আব্দুল গনি রোডে অবস্থিত খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দোকান সেল/ ট্রাক সেল এ নিয়ম অনুযায়ী ডিলারদের কাছে যতক্ষণ মাল থাকবে ততক্ষণই বিক্রয় করবে। তবে এই নিয়মের কোন ধরনের তোয়াক্কা না করেই ডিলারগণ। ঢাকা রেশনিং এর প্রধান নিয়ন্ত্রক, সহকারী নিয়ন্ত্রক এআরও, এবং মাঠ পর্যায়ের তদারকি কর্মকর্তাগণের যোগসাজশে একটি সিন্ডিকেটের বলয় তৈরি করেছে । এই সিন্ডিকেটের বলয়ে প্রতিমাসে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয় | এই লেনদেনের সঙ্গে ঢাকা রেশনিংয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ জড়িত রয়েছেন। ওএমএস এর এই বিশাল অনিয়মের কথা প্রধান রেশনিং কর্মকর্তা থেকে শুরু করে খাদ্য উপ-পরিদর্শক পর্যন্ত বিষয়টি সবার জানা বলে জানান কয়েক জন কর্মকর্তা।

এছাড়া, প্রধান রেশনিং কর্মকর্তা ইচ্ছার উপর নির্ভর করে ডিলারদের মালামাল উত্তোলনের রোস্টার। কোন ডিলার সপ্তাহে ৫ দিন মালামাল পায় আবার কোন ডিলার পায় একদিন এমন অভিযোগও রয়েছে। তবে এগুলো অস্বীকার করেছেন ঢাকা রেশনিং এর প্রধান নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। সকাল ৯ টার আগেই নিদিষ্ট পয়েন্টে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। সেখান থেকে পণ্য বিক্রয় না করে ফেরা সম্ভব নয়। তবে সরেজমিন, সকাল ৯টার সময় ভোক্তারা উপস্থিত হলেও ওএমএস এর ট্রাক আসে সকাল ১১টার পর।

ঢাকা রেশনিং এর সহকারী প্রধান নিয়ন্ত্রক সাব্বির মুরাদ জানান, এ বিষয়টি তদারকি করা তার দায়িত্ব নয়। ওএমএস এর অনিয়মের অভিযোগ আপনার দিকে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের খেয়ে কোন কাজ নেই তারা তো অভিযোগ করতেই পারে। অন্যদিকে, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল মুকিত এর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

ও এমএস কার্যক্রমের চাল-আটার সুবিধা ভোগ করেন সাধারণত নিম্ন আয়ের লোকজন, কিন্তু অসাধু ডিলার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের, যোগ সাজোসে এই কার্যক্রমের সুবিধা ঠিকমতো ভোগ করতে পারছে না বলে জানান সাধারণ মানুষ |

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments