জবি প্রতিনিধি: ভিডিও ধারণের সন্দেহে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর) ভবনের নিচে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মো. রায়হান হোসেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফিন্যান্স বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী মো. জিহান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. জিহান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গতকাল বুধবার একটি পোস্ট দেন। সে পোস্টে তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সফল হলেও সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনভাবে ক্যাম্পাস উপভোগ সফল হয়নি। জুলাই বিপ্লবে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে আন্দোলন করছি এবং প্রথম সারির অংশগ্রহণকারী ছিলাম। আজ (বুধবার) নিজের সাথে এমনটা মেনে নিতে পারতেছি না। আজকে ৩টা ১০-এর দিকে IER ভবনের ওপরে আমি এবং আমার এক বন্ধু দাঁড়িয়ে কথা বলতেছিলাম।’
পোস্টে আরও বলা হয়, ‘সে সময় নিচে ছাত্রদলের পোলাপান তারা নিজেরা নিজেরা কী নিয়ে কথা-কাটাকাটি চলতেছিল। তখন আমার হাতে মোবাইল ছিল এবং ছাত্রদলের তারা মনে করছিল আমি ভিডিও করতেছি। এই মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে আমারে মারছে বিশেষ করে রাইয়ান (ছাত্রদল) নামে ১৭ ব্যাচের (ফিজিক্স) আমারে থাপ্পড় এবং লাথি মারে। প্রকৃতপক্ষে আমি কোনো ভিডিও করি নাই, তারপরও মারছে। আমি চিল্লায় চিল্লায় বলতেছিলাম আমি ভিডিও করিনি বরং আপনারা দেখেন আমি পাসওয়ার্ড খুলে দিই চেক করেন তারপরও আমায় মারছে।’
ভুক্তভোগী মো. জিহান বলেন, ‘গতকালের ঘটনার পর আজ আমি প্রক্টর স্যারকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তিনি বলেছেন আমার বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন।’
অভিযুক্ত রায়হান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলছিল। তখন আমাদের মনে হয় জিহান তার ফোনে ভিডিও করছে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে ভিডিও করেনি বলে জানায়। এরপর উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। প্রথমে তাকে বহিরাগত ভেবেছিলাম।’
এ বিষয়ে জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘আমি ছাত্রদলের প্রতিটি নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি যেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো ধরনের দুর্ব্যবহার করা না হয়। এই বিষয়টি আমি দেখছি।’
শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘এমন কিছু ঘটে থাকলে আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের জানাব এবং তারা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। আমি কোনো ধরনের সহিংসতাকে সমর্থন করি না।’
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা বিচারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে। পরবর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটু আগে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’