দীপক সূত্রধর,মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গা উৎসব। দেবী দুর্গা মায়ের দর্শন পেতে মণ্ডপে মণ্ডপে ভীর করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
এ বছর জেলায় ৫১৩ টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হিন্দুদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে গত বছরের থেকে এ বছর পূজা কমেছে ৫৮ টি মন্দিরে।
সরেজমিনে জেলার মণ্ডপগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মন্ডপ গুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবস্থা,দর্শনার্থী ভক্তদের নারী পুরুষ আলাদা লেন, জেনারেটর ব্যবস্থা সহ সার্বিক বিষয়ে কাজ করছে মন্দির কমিটির সদস্যরা।
এছাড়াও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রতিটি মন্দিরে দেখা গেছে আনসার সদস্যদের। এবং বিশেষ নিরাপত্তায় ৫৭৬ জন পুলিশ অফিসার ও সদস্যরা কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।
তথ্য সংগ্রহকালে কথা হয় বিভিন্ন এলাকার মন্দির কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সাথে। তাদের মধ্যে সদর উপজেলার দিঘী কালিবাড়ি দুর্গা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক লিটন হালদার জানায়, কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া দুর্গা উৎসব করতে পারছি। আর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও যথেষ্ট সহযোগিতা করছে আমাদের।
ঘিওর নিমতলা লোকনাথ মন্দিরের দুর্গা পূজার সভাপতি নিতাই চন্দ্র ঘোষ বলেন, শুধুমাত্র নিরাপত্তা আর প্রশাসনের লোকই নয় আমাদের এই মন্দিরে সকল ধর্মের মানুষের সহযোগিতাতে হয় সকল অনুষ্ঠান।
এছাড়াও পূজা সুন্দর ভাবে পালন করতে ও বিভিন্ন সহযোগিতা সহ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন করতে দেখা গেছে জেলা বিএনপি’র সভাপতি আফরোজা খান রিতা ও সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর সহ অনেকে।
পূজায় বন্ধুদের সাথে ঘুরতে আসা সজল কর্মকার বলেন, ঘিওরে ঠাকুর দেখেছি,সদরে দেখেছি, আজ সিংগাইর যাচ্ছি। এ পর্যন্ত যত গুলো মন্দির দেখেছি পরিবেশ বেশ গোছানো ছিলো। এছাড়াও রাস্তার প্রতিটি মোড়ে ট্রাফিক নিরাপত্তা থাকায় ভোগান্তি ছাড়াই এক মন্দির থেকে আরেক মন্দিরে পৌঁছতে পারছি।
ঘিওরের বানিয়াজুরী মালাকার বাড়িতে পরিবারের সাথে দেবী দুর্গা ঠাকুর দেখতে এসেছে উর্মিলা সূত্রধর। উর্মিলা বলেন, প্রতি বছরের মত এবারও বাবা মা এর সাথে ঠাকুর দেখতে এসেছি এবং দেবী দুর্গা মাকে মন্দিরে মন্দিরে যেয়ে প্রণাম করছি বেশ ভালো লাগছে।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তাপস রাজবংশী বলেন, জেলার বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন করেছি এবং তাদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি সকল ধর্মের ও শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতায় সুন্দর ভাবে পূজা উদযাপন হচ্ছে, এবং আমাদের কর্মীরাও সকল মন্দিরে মনিটরিং এর কাজ করছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব সাহা বলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে পূজায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা অংশগ্রহণ করছে। এবং পূজায় তাদের সংগঠনের সদস্যরাও নিরাপত্তায় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোঃ বশির আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোন ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ৫৭৬ জন পুলিশ অফিসার সহ সদস্যরা নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক ড. মনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন,মানিকগঞ্জের মানুষ অনেক শান্তিপ্রিয়। আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোন খারাপ সংবাদ আসেনি। এছাড়াও আমাদের প্রশাসনের লোকজন মন্দির পরিদর্শন করছেন এবং তাদের খোঁজ খবর রাখছেন। পরিশেষে শারদীয় শুভেচ্ছা জানান তিনি।