Thursday, February 6, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeদেশরাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষ্যে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষ্যে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

ফয়সাল আহমেদ, রাজবাড়ী:আর মাত্র ১ দিন পর। আগামী ৯ অক্টোবর শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা। সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে গোয়ালন্দে মন্ডপে মন্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বাহারি রং আর হাতের সুনিপুণ ছোঁয়ায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে প্রতিমা। দম ফেলানোর ফুরসত নেই এসব শিল্পীদের। গত বুধবার ২ সেপ্টেম্বর বুধবার শুভ মহালয়ার চন্ডীপাঠের মধ্যমে মর্ত্যলোকে আগমন জানানো হয় দেবীদুর্গাকে।

জানা গেছে আগামী বুধবার ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর
মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার মুল আনুষ্ঠানিকতা।আগামী রোববার ১৩ ই অক্টোবর বিজয়া দশমীর তিথি প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের ৫ দিনব্যাপী এ শারদীয়া দুর্গাৎসব। এবছর দোলায় অর্থাৎ পালকিতে চেপে দেবীদুর্গা মর্ত্যলোকে আগমন করবেন। আবার গজাতে অর্থাৎ হাতিকে চড়ে কৈলাসে ফিরবেন।

৮ অক্টোবর সোমবার উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব মন্ডপেই চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। দিনরাত প্রতিমা তৈরি পর শেষ মুহূর্তে রং তুলিতে মনের মাধুরী মিশিয়ে দেবীদুর্গা,সরস্বতী,কার্তিক,গণেশ, ও লক্ষিকে সাজাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা। অধিকাংশ পূজা মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি মূল কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। চলছে সাজ-সজ্জা ও রঙের কাজ। সীমিত পরিসরে পূজা অনুষ্ঠিত হলেও বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে পূজা মন্ডপগুলো এখন শুধু প্রতিমায় পরিপূর্ণ রূপ দিতে রং তুলির শেষ আঁচড়
দেওয়া হচ্ছে। আর একদিনের মধ্যেই প্রতিমার কাজ শেষ হবে।

গোয়ালন্দ পৌরসভার রেলস্টেশন সংলগ্ন রামকৃষ্ণ
হরিজন পল্লীর মন্দিরের কাজ করতে আসা মৃৎশিল্পী অমল পাল জানান, তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা মিলে ২৫ টি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছেন। মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরি কাজ আরো আগেই শেষ হয়েছে। বর্তমানের তাঁরা রং তুলি কাজ করছেন।বিভিন্ন রং দিয়ে তাঁরা প্রতিমার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছেন। এতে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তাঁরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আগামী বুধবার মহাষষ্ঠীর আগেই তাঁরা সব কাজ শেষ করবেন।

অমল পাল আরো জানান , কয়েকদিন থেকেই আকাশের মুখ অনেক ভার বৃষ্টি ও হচ্ছে তাই প্রতিমা সুখাতে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। আর একদিনের মধ্যেই প্রতিমাগুলো প্যান্ডেলের মধ্যে পৌছাইয়া দিতে হবে। তাই বৃষ্টির মধ্যেই আমাদের প্রতিমা তৈরীর কাজ যেকোনো উপায়েই শেষ করতে হচ্ছে। মৃৎশিল্পী অমল পাল জানান, তাঁরা আগে প্রতিমা তৈরি করে ভালো টাকা আয় করতেন। কিন্তু বর্তমানে প্রতিমা তৈরীর উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তেমন কিছুই থাকে না। প্রতিমা তৈরীর কাজ ছাড়া অন্য কোন কাজ জানেন না বলেই এই কাজেই যাচ্ছেন।

প্রতিমা তৈরীর ফাঁকে নির্মল পাল নামে আরে এক কারিগর বলেন, পূজার আর বেশি দেরি নেই তাই জোর দমে কাজ চলছে। মাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বাকি দিনগুলোর মধ্যেই রং এর কাজ শেষ হয়ে যাবে। তারপরেই মা তাঁর বাড়িতে যাবে।

এদিকে গোয়ালন্দ ঘাট থানার (ওসি) ভারপ্রাপ্ত
রাকিবুল ইসলাম বলেন, পূজা মণ্ডপে আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোন ধরনের কার্যক্রম হলে সংশ্লিষ্ট কাউকে বিন্দু পরিমান ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এবং গোয়ালন্দ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিতের কিছু দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাকর্মীদের।

গোয়ালন্দ উপজেলায় পূজা উদযাপন পরিষদের
দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পৌরসভা সহ উপজেলায় ২৬ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্রী কার্তিক চন্দ্র ঘোষ বলেন, এবছর পৌর এলাকায় ১৬টি মন্ডপে পূজা উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিমা তৈরি প্রায় শেষ পর্যায়ে কিছু জায়গায় মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরের নিরাপত্তা জোরদার করতে সিসি ক্যামেরা লাগানোর প্রস্তুতি চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। আশা করছি এবারে সবাই ভালোভাবে পূজা উদযাপন করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, পূজা সুষ্ঠু ও নিরাপত্তার জন্য সরকারিভাবে যে নির্দেশনা থাকবে তার বাইরে স্বেচ্ছাসেবক দল ও আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আনসার রাখা হবে। পাশাপাশি পৌর কমিটির পক্ষ থেকেও মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক কাজ করবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments