রংপুর প্রতিনিধি : মোঃ একরামুল হক
রংপুরের পীরগাছায় মেধাবী ও ক্লাস রোল ১ হওয়া সত্ত্বেও সুমনা আক্তার পেলেন না প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ট্যাব। তাকে ট্যাব না দিয়ে প্রধান শিক্ষক মাহবুবার রহমান স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ৬টি ট্যাব বিতরণ করেন। ঘটনাটি উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের তেয়ানি মনিরাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটে। এ ব্যাপারে ট্যাব বঞ্চিত সুমনার বাবা দিনমজুর শুকুর আলী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলা পরিসংখ্যা ব্যুরো অধিদপ্তরের আওতায় জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১ প্রকল্পের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব নবম ও দশম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিতরণের কার্যক্রম শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে তেয়ানি মনিরাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবার রহমানের কাছে ৬জন মেধাবী শিক্ষার্থীদের তালিকা চাওয়া হয় উপজেলা মাধ্যমিক অফিস থেকে। সেই তালিকায় ওই স্কুলের ১০ম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী সুমনা আক্তারের নাম পাঠায়নি প্রধান শিক্ষক। সুমনার নাম না পাঠিয়ে প্রধান শিক্ষক তার মেয়ে মিথিলা আক্তারের নাম যিনি একই উপজেলার চৌধুরাণী তছিরন নেছা প্রিপারেটরী স্কুলে নিয়মিত ক্লাস করছেন। তেয়ানি মনিরাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় মিথিলার নাম থাকলেও উপস্থিত নেই প্রায় ৭মাস থেকে।
প্রধান শিক্ষক শুধু তার মেয়েকে নয় ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক নাজমুল ইসলামের ছেলে সানি মিয়া যিনি রংপুরে একটি বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। এমনকি ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরী সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার ও তার নাতনী ও প্রধান শিক্ষকের ভাতিজির ছেলেকে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ট্যাবগুলো বিতরণ করেছেন। এ নিয়ে ওই স্কুলের ট্যাব বঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ওই বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী আশামনি ও সুমনা আক্তারসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা মেধাবী হয়েও ট্যাব পাইনি অথচ প্রধান শিক্ষকের মেয়ে এই স্কুলের ছাত্রী না হয়েও সে ট্যাব পেয়েছে। সুমনা আক্তার আরও বলেন, আমি বিজ্ঞান বিভাগের ১ রোল হয়েও আমি ট্যাব পেলাম না অথচ সহকারি শিক্ষক নাজমুল ইসলামের ছেলে সানি মিয়ার ২ রোল হয়েও সে কিভাবে ট্যাব পেল?
সুমনা আক্তারের বাবা রিকশাচালক শুকুর আলী জানান, আমি সামান্য রিকশাচালক। অনেক কষ্টে করে আমার মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছি। প্রধান শিক্ষকের স্বজনপ্রীতির কারণে আমার মেয়ে ১ রোল হয়েও সে ট্যাব পেল না।
আমাদের প্রতিনিধি প্রধান শিক্ষকের মেয়ে মিথিলা আক্তার চৌধুরাণী তছিরন নেছা প্রিপারেটরী স্কুলে পড়ে কিনা-তা যাচাই করতে সরেজমিনে গিয়েছিল ওই স্কুলে। স্কুলের পরিচালক মুইদুর রহমান পিনু সত্যতা স্বীকার করেন।
তেয়ানি মনিরাম দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবার রহমান বলেন, আমরা প্রায় প্রতিষ্ঠান থেকে ২/১জন শিক্ষার্থীদের কোচিং করাই। তাতে আমাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভালো হয়। তার মেয়ের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মেয়ে মিথিলা কোচিং করতেছে। সে ২০২৪ সালের পরীক্ষার্থী। ট্যাব বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হক সুমন মুঠোফোনে জানান, নিয়মানুয়ায়ী ১-৩ রোল মেধাবী শিক্ষার্থী ট্যাব পাবে। এর বত্যয় ঘটলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে