Sunday, October 13, 2024
No menu items!
Google search engine
Homeআন্তর্জাতিকইউনেস্কোর স্বীকৃতির দুই যুগ পর ২১ ফেব্রুয়ারিকে 'মাতৃভাষা দিবস' ঘোষণা করল নিউ...

ইউনেস্কোর স্বীকৃতির দুই যুগ পর ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করল নিউ ইয়র্ক

ইমা এলিস/ বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক: ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দুই যুগ পর ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’-এর হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিল। এ সংক্রান্ত একটি বিল বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) সিটি কাউন্সিলে পাশ হয়েছে। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার এলাকা থেকে নিবাচিত কাউন্সিলওম্যান আমান্দা ফারিয়াস এ বিষয়ে একটি রেজুলেশন উপস্থাপন করেন। রেজুলেশনের কো-স্পন্সর ছিলেন ব্রুকলিন থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত শাহানা হানিফ। রেজুলেশনটি স্পন্সর করে সিটি কাউন্সিলের ‘কমিটি অন কালচারাল এ্যাফেয়ার্স ও লাইব্রেরিজ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারগ্রুপ রিলেশন্স’।
রেজুলেশনে বলা হয়, ২১ ফেব্রুয়ারী ‘মাদার ল্যাংয়েজ ডে’ হিসাবে নিউইয়র্ক সিটিতে পালিত হবে। বাংলাদেশী বাঙালী কমিউনিটির কাছে বাংলা ভাষার প্রতি যে গুরুত্ব রয়েছে তার সম্মান প্রদর্শন করাই এই ঘোষণা দেয়ার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। পাশাপাশি নিউইয়র্ক সিটিতে যে কালচারাল ডাইভারসিটি বা সাংস্কৃতিক বৈচিত্র রয়েছে তাকে আরো উচ্চপর্যায়ে তুলে ধরা।
এই রেজুলেশনের অন্য স্পন্সররা হলেন কাউন্সিল সদস্য যথাক্রমে টিফানি ক্যাভান, জুলি ওয়ান, কৃস্টাল হাডসন, শেখর কৃষ্ণান, এরিক ডাইনোউইটজ, নাতাশা উইলিয়ামস, চি ওসি, অ্যালেক্স এ্যাভাইলস, স্টোফার মার্টি, ফারাহ লুইস, জুলি মেনিন, পিয়েরিনা এ্যানা স্যানচেজ, কারলিনা রিভেরা, মারজোরি ভেলাজকুয়েজ ও জেমস জিনারো।
উল্লেখ্য, একুশে ফেব্রুয়ারি-শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এ দিনে (৮ ফাল্গুন ১৩৫৮) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ শহিদ হন।
৯ জানুয়ারি ১৯৯৮ কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানকে চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানেরও দাবি জানান। ২৩ জানুয়ারি ১৯৯৮ জাতিসংঘ থেকে উত্তর আসে যে জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, এ সংস্থা কোনো ব্যক্তির আবেদনে বিবেচনায় নিতে পারে না। আবেদন আসতে হবে জাতিসংঘের যে কোনো সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে। এ প্রেক্ষিতে রফিকুল ইসলাম কানাডা প্রবাসী আরেক বাংলাদেশি নাগরিক আবদুস সালামকে নিয়ে সাতটি ভিন্ন ভাষার ১০জন সদস্য মিলে দ্য মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার অব দ্য ওয়ার্ল্ড নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেন। ২৯ মার্চ ১৯৯৮ এ সংগঠনের পক্ষ থেকে আবার ১০ সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত সেই একই প্রস্তাব জাতিসংঘে পাঠানো হয়। জাতিসংঘ মহাসচিবের অফিস থেকে জানানো হয়, এটির জন্য যোগাযোগ করতে হবে প্যারিসে অবস্থিত ইউনেস্কো’র সাথে। ৪ এপ্রিল ১৯৯৯ ইউনেস্কো ফ্যাক্সে পাঁচটি দেশের নাম এবং তাদের ইউনেস্কো অফিসের ঠিকানা দিয়ে ঐ সব দেশকে প্রস্তাবটি জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপনের অনুরোধ জানায়। দেশ পাঁচটি হচ্ছে- কানাডা, ভারত, ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি, এবং বাংলাদেশ।
 অবশেষে ৫ অক্টোবর-১৫ নভেম্বর ১৯৯৯ অনুষ্ঠিত ইউনেস্কো’র নির্বাহী পরিষদের ১৫৭তম অধিবেশনে প্রস্তাবটি স্বীকৃত লাভ করে। এরপর ইউনেস্কো’র দ্বিবার্ষিক ৩০তম সাধারণ সভার শেষ দিন অর্থাৎ ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। সেদিনই প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। উপস্থিত ১৮৮টি সদস্য রাষ্ট্রের কেউই এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেনি।
ইউনেস্কো’র সাধারণ সভা প্রতি দুই বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৬ সালে প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ নভেম্বন ১৯৯৯ ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এখন প্রশ্ন হলো ইউনেস্কো যদি ২৯ তম বা ৩১তম সভায় ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে সালটি কেন ১৯৯৯ হবে? সাল তো হওয়া উচিত ১৯৯৭ বা ২০০১।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments