আন্তর্জাতিক প্রতিবেদক: আবু মোহাম্মদ ফয়সাল
ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের ভেতরে প্রভাব বিস্তারের জন্য কাতার কয়েকজন ইইউ কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়েছে– এমন এক অভিযোগ ওঠার পর ব্রাসেলসে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর বিবিসির। ইসি চেয়ারম্যান উরসুলা ভন ডার লাইন এ ঘটনাকে খুবই গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ বলে বর্ণনা করেছেন। এই নিয়ে ইউরোপে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বেলজিয়ামের পুলিশ যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে তাদের মধ্যে আছেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইভা কাইলি। বাকিদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি। এ চারজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ-পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশি অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থও উদ্ধার করা হয়।এদিকে কাতার কোনো অন্যায় করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, অভিযোগের গুরুত্ব ও মাত্রা দেখে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের অনেক সদস্য হতবাক হয়ে গেছেন। অনেকে বলছেন, এটি হয়তো ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্নীতির কেলেংকারির অন্যতম হতে যাচ্ছে।দেশটির নাম কাতার কৌঁসুলিরা বলছেন, তারা সন্দেহ করছিলেন যে একটি উপসাগরীয় দেশ বেশ কয়েক মাস ধরে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর প্রভাব বিস্তার করছিল। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে দেশটির নাম কাতার বলে উল্লেখ করা হয়। তবে কাতারের সরকার বলছে, অসদাচরণের এসব দাবি গুরুতর অজ্ঞতাপ্রসূত। ইউরোপীয় সংসদের সদস্যদের কোনরকম ব্রিফিং করার কথাও কাতার অস্বীকার করেছে। গ্রিক রাজনীতিক ইভা কাইলির বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তাকে তার বাড়িতে বস্তাভর্তি অর্থসহ ধরা হয়েছে। তদন্তকারীদের ধারণা, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এক বিতর্কে কাতারকে সমর্থন করার জন্য তিনি ঐ অর্থ পেয়েছেন। তবে কাতারের সরকার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের ঘুষ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মিজ কাইলির দায়িত্বের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তিনি অতীতে কাতারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
নগদ লক্ষ লক্ষ ইউরো পেয়েছে পুলিশ
ব্রাসেলসে শুক্রবার ১৬টি জায়গায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ নগদ ৬ লাখ ইউরো বাজেয়াপ্ত করে, তা ছাড়া কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়। কাইলি আট বছর ধরে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন এবং এ ঘটনার পর তাকে পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া পার্লামেন্টের সোশালিস্ট-ডেমোক্র্যাট গ্রুপ এবং গ্রিসের মধ্য-বাম পাসোক পার্টি থেকেও তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গ্রিসের কৌঁসুলিরা কাইলির সকল সম্পদ ফ্রিজ করেছেন বলেও জানা গেছে।
হিমশৈলের চূড়া মাত্র
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একজন ঊর্ধ্বতন সদস্য বলেছেন কাতারকে ঘিরে বর্তমান দুর্নীতির কেলেঙ্কারি তার ভাষায় হিমশৈলের চূড়ামাত্র। পার্লামেন্টের বামপন্থী গোষ্ঠীর সহ সভাপতি মানন অব্রে এক টুইট বার্তায় বলেছেন তিনি দেখেছেন যে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে তার সহকর্মীরা যারা কাতারে গেছেন তারা ফিরে আসার পর মত বদলে ফেলেছেন। অব্রে বলেছেন, সরকারগুলোর জোরালো তদ্বিরের প্রক্রিয়া নিষিদ্ধ করা উচিত এবং ইইউর প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়মনীতি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।